Durga Puja 2022: ‘ঘুরপথে কর্পোরেট অনুদান ক্ষমতাশালীদের পকেটে, মার খাচ্ছে ছোট পুজোগুলি,’ অসাম্য নিয়ে সরব খোদ মুখ্যমন্ত্রীর ভাই
Kartik Banerjee: দর্শনার্থীদের ভিড় টানতে শহরের এই নামী এই পুজোগুলির মধ্যেই চলে অঘোষিত প্রতিযোগিতা। এই প্রেক্ষাপটেই দুর্গাপুজোয় নেতা-মন্ত্রীদের ভূমিকা নিয়ে সরব হলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীর ভাই।
কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, শিবাশিস মৌলিক ও রঞ্জিৎ হালদার, কলকাতা: ছোট পুজো যেখানে অর্থাভাবে ধুঁকছে, সেখানে নেতা-মন্ত্রীদের (Durga Puja 2022) পুজোয় কর্পোরেট-সাহায্য নিয়ে, এবার বিস্ফোরক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ভাই তথা তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় (Kartick Banerjee)। একটি পত্রিকার শারদীয়া সংখ্যায় তিনি এ নিয়ে কলম ধরেছেন। বিষয়টি সামনে আসতেই মুখ খুলেছে বিরোধীরা। যদিও, তৃণমূল একে স্রেফ পুজোর সমস্যা হিসেবেই দেখছে।
দুর্গাপুজোয় কর্পোরেট কালচার নিয়ে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রীর ভাই
মুখ্য়মন্ত্রীর ভাই তথা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক কার্তিকের কথায়, "ক্ষমতাশালী কিছু লোক যদি সবই কুক্ষিগত করে রাখে, তাহলে সর্বজনীন দুর্গাপুজোর কি হবে? এর প্রতিবাদ হওয়া উচিত।"
কলকাতার অনেক জনপ্রিয় পুজোই এখন পরিচিত শাসক দলের হেভিওয়েট নেতাদের নামে। যেমন চেতলা অগ্রণীর পুজোকে সবাই চেনেন ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) পুজো হিসেবে। সুরুচি সঙ্ঘের সঙ্গের পুজো আবার অরূপ বিশ্বাসের (Aroop Biswas) পুজো হিসেবেই পরিচিত। শ্রীভূমির সঙ্গে আবার নাম জড়িয়ে রয়েছে সুজিত বসুর (Sujit Bose)।
দর্শনার্থীদের ভিড় টানতে শহরের এই নামী এই পুজোগুলির মধ্যেই চলে অঘোষিত প্রতিযোগিতা। এই প্রেক্ষাপটেই দুর্গাদুর্গাপুজো" href="https://bengali.abplive.com/topic/durga-puja" data-type="interlinkingkeywords">পুজোয় নেতা-মন্ত্রীদের ভূমিকা নিয়ে সরব হলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীর ভাই। কার্তিক নিজেও কালীঘাট মিলন সঙ্ঘের পুজোর সঙ্গে যুক্ত।
কিন্তু 'বিবেক ভাষা' নামের একটি পত্রিকার শারদীয়া সংখ্যায় প্রকাশিত বিবেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে লেখা ওই প্রতিবেদন সকলের নজর কেড়েছে। তবে বিবেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে তিনিই, তা স্বীকার করে নিয়েছেন কার্তিক।
কালীঘাট মিলন সঙ্ঘের পুজো মণ্ডপে এবিপি আনন্দের প্রতিনিধি পৌঁছলে কথা বলেন কার্তিক। প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে জিজ্ঞেস করা হয়, এই বিবেক বন্দ্যোপাধ্যায় কি তিনি? কার্তিকের জবাব, "মোটামুটি তাই।" মোটামুটি কেন জানতে চাইলে আর রাখঢাক করেননি তিনি। বরং বলেন, "আমাদেরই লেখা।"
'বিবেক ভাষা' পত্রিকায় ‘সর্বজনীন দুর্গোৎসবের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে কার্তিক লিখেছেন, 'কিছু নেতা বা কিছু শক্তিশালী মানুষ, পুরোটাই নিজেদের মধ্যে কুক্ষিগত করে রাখছে। সবাইকে বলব, আপনারা সজাগ হোন, নয়তো সর্বক্ষেত্রে সর্বগ্রাসী ভূমিকা নেবে এরা।'
আরও পড়ুন: Durga Puja 2022: শিল্প উত্কর্ষের ছোঁয়া মণ্ডপে মণ্ডপে, স্বীকৃতি দিতে এবিপি আনন্দর 'বিশেষ সম্মান'
করোনার জেরে গত দু'বছরে পুজো ঘিরে উৎসাহে খানিকটা হলেও ভাঁটা পড়েছে। তার উপর টাকার অভাবে, অনেক পুজোই আড়ে-বহরে ছোট হয়েছে। চাঁদা তুলে পুজো করা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এই প্রেক্ষাপটে নেতা-মন্ত্রীদের পুজোয় কর্পোরেট সাহায্য নিয়ে কার্যত বোমা ফাটিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর ভাই।
ওই প্রতিবেদনে আরও লেখা হয়েছে, 'যে কর্পোরেট সংস্থাগুলি টাকা দেয়, তারা ওই ১৫-২০টি পুজো বা কোন মন্ত্রী নেতা বা শক্তিশালী লোকজনদের বারবার দিচ্ছে। প্রতি বছর তারা সব টাকাটাই সাইফন করে তুলে নিচ্ছে। ফলে ছোট ছোট ক্লাবগুলো বঞ্চিত হচ্ছে।'
এবিপি আনন্দের মুখোমুখি হয়ে কার্তিক বলেন, "রাজ্যে প্রায় ৪৫ হাজার পুজো হয়। একটা সময় তা উৎসবের চেহারা পেত। কিন্তু, এখন ব্যয়ভার বহন করার ক্ষমতা হারিয়ে যাওয়ায় পাড়ার পুজোগুলো ছোট হয়ে যাচ্ছে। নেতা-মন্ত্রীদের ১৫-১৬ টি পুজোয় সবাই আটকে আছে। সমস্ত কর্পোরেটদের টাকা কয়েকজন সাইফোন করে নিচ্ছে।"
তাঁর এমন মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, "এটাকে পুজো পলিটিক্সের মধ্যে রাখতে হবে। কর্পোরেট সংস্থা দেয়। সমস্যাটা ঠিকই। সামঞ্জস্য করা উচিত। সিপিএম-এর আমলেও ছিল।"
সিপিএম-এর আমলেও এই সমস্যা ছিল, যুক্তি কুণালের
তবে পুজোয় কর্পোরেটের ভূমিকা নিয়ে সরব হলেও, মুখ্যমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি। তিনি লিখেছেন, 'কর্পোরেটদের টাকা প্রত্যেকটা সংস্কৃতি প্রেমিক পুজো কমিটির মধ্যে সম-পরিমাণে বন্টন করা যায় কিনা, সবাই মিলে ভাবুন! মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী সেটা চেষ্টা করছেন।'